বৃহস্পতিবার ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ বিকাল ৪:৪০

আয়ের চেয়ে খরচ বেশি বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
আয়ের চেয়ে এখন খরচই বেশি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি)। সভা-সমাবেশ, নির্বাচন বাবদ গত এক পুঞ্জিকা বছরে কোনো বিএনপির কোনো খরচ নেই। তবে সাংগঠনিক কার্যক্রম, বিভিন্ন দিবস পালন ও সেমিনার বা ওয়ার্কশপ খাতে দলের ব্যয় হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) লিখিতভাবে জানিয়েছে দলটি।

আগারগাওস্থ নির্বাচন ভবণে গতকাল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব মো. আলমগীরের কাছে দলের পক্ষে ২০১৯ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। সেই হিসাব থেকে এইসব তথ্য পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পূর্ববর্তী পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব (অডিট রিপোর্ট) নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অবশ্য কোনো দল চাইলে নির্ধারিত সময়ের আগে ইসিতে আবেদন করে সময় বাড়াতে পারে। এ হিসাবে বিএনপি ইসির কাছে একমাস সময় চেয়েছিল।

দাখিলকৃত হিসাবে তথ্যনুযায়ী, দলের স্টাফদের বেতন-ভাতা খাতে পাঁচ লক্ষাধিক এবং ইউটিলিটি বিল বাবদ ৬০ হাজারের মতো টাকা রয়েছে। তাদের আয় উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এর আগের বছর যেখানে দলের আয় ছিল প্রায় ১০ কোটি টাকা। এবার আয় সে হয়েছে সেখানে এক কোটিরও কম। অর্থাৎ ২০১৮ সালের দশ ভাগের একভাগও আয় ২০১৯ সালে করতে পারেনি বিএনপি। অবশ্য ২০১৮ সালে দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় ওই বছর দলীয় মনোনয়নপত্র ফরম বিতরণ করে বিএনপি বড় পরিমাণে আয় করেছিল।

গত ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পুঞ্জিকা বছরে বিএনপির আয় ছিল ৮৭ লাখ ৫২ হাজার ৭১০ টাকা। সেখানে খরচ হয়েছে দুই কোটি ৬৬ লাখ ৮৬ হাজার ১৩৭ টাকা। ফলে এ বছর দলটির ঘাটতি হয়েছে এক কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৪২৭ টাকা। অবশ্য ব্যয়ের মধ্যে গত ২০১৮ সালের কিছু খাতের বকেয়া পরিশোধ করতে হয়েছে। এর আগের বছর (২০১৮) দলটির আয় ছিল ৯ কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮০ টাকা। বিপরীতে ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ৭৩ লাখ ২৯ হাজার ১৪৩ টাকা।

তথ্যানুযায়ী, ২০১৯ সালে বিএনপির দুই কোটি ৬৬ লাখ ৮৬ হাজার ১৩৭ টাকা ব্যয়ের মধ্যে কর্মচারীদের বেতন বোনাস বাবদ ব্যয় করে ৭৫ লাখ ৬ হাজার ১০৭ টাকা। এ খাতে পূর্বের বকেয়া পরিশোধ করেছে তিন লাখ ৪৪ হাজার ৫০০ টাকা। কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ এখনো দলটির বকেয়া রয়েছে পাঁচ লাখ ১৪ হাজার ৯৫০ টাকা। এ বছর আসবাবপত্র ও প্রশাসনিক খরচ বাবদ ব্যয় হয়েছ ১৬ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬৬ টাকা। টেলিফোন, ইন্টারনেট, কুরিয়ার সার্ভিস ও পত্রিকা বিল বাবদ খরচ সাত লাখ ১০ হাজার ১৩৭ টাকা। এ খাতে পূর্বের বকেয়া পরিশোধ করেছে ২৯ হাজার ৯২২ টাকা। বকেয়া আছে ২৮ হাজার ১২৪ টাকা।

ইসিতে দাখিলকৃত হিসাবের তথ্যানুযায়ী, দলটির পথসভা/জনসভা/ঘরোয়া বৈঠক এবং নির্বাচন বাবদ কোনো খরচ নেই। খরচ নেই জাতীয় সম্মেলন বাবদও। তবে দলের প্রচারণা/পরিবহন বাবদ ২১ লাখ ৮০ হাজার ২০০ টাকা, সাংগঠনিক কার্যক্রম বাবদ ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৫ টাকা, বিজ্ঞাপন বাবদ ১৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা, প্রকাশনা বাবদ আট লাখ ১২ হাজার ৭৮৪ টাকা, জাতীয় ও বিভিন্ন দিবস উদযাপন বাবদ ২১ লাখ ৩০ হাজার ৯শ’ টাকা, ত্রাণ কার্যক্রম বাবদ ১৮ লাখ ৮৪ হাজার ৭২৯ টাকা, যাতায়াত বাবদ এক লাখ ৩ হাজার ৩৬৭ টাকা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বাবদ ২২ লাখ ৪১ হাজার ৬৪০ টাকা, সেমিনার ওয়ার্কশপ বাবদ ১২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, আপ্যায়ন খাতে ৮ লাখ ৬১ হাজার ৫৬৫ টাকা, স্থায়ী-অস্থায়ী সম্পদ ক্রয় খাতে পাঁচ লাখ ৯০ হাজার ৬৯১ টাকা, মেরামত ও সরবরাহ খাতে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৩৫ টাকা এবং অন্যান্য খাতে খরচ হয়েছে ৭ লাখ ১০ হাজার ৩২৮ টাকা।$$$হামিদ সরকার।

© Alright Reserved 2020, The Morning Telegraph