শনিবার ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ সকাল ৯:১৭

দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে: জাফরুল্লাহ

দেশের টোটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাষ্টি ডা.জাফরুল্লাহ চৌধুরি।
বুধবার (২৬ আগষ্ট) ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে প্লাজমা ও ব্লাড ডোনেশন সেন্টারে সদ্য করোনা মুক্ত হয়ে প্লাজমা ডোনেট করতে আসেন বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা। এ সময় ডা. জাফরুল্লাহ দেশের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় হাসপাতালের মাইক্রোবায়ালজি বিভাগের অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান, প্যাথলজি ডিপার্টমেন্টর প্রধান গোলাম মোহাম্মদ কোরাইশি, গনস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু,গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের পরিচালক, প্রশিক্ষণ ও সনোলজিষ্টি মোহাম্মদ শওকত আলী আরমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরি বলেন, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা টোটালি ভেঙ্গে পড়েছে। এই সরকার সামরিক সরকারের চেয়েও খারাপ। তারা কারো কথা শুনছে না।
আমি মার্চে বলেছি করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছে, অক্সিজেনের পর্যাপ্ত সাপ্লাই আছে কিনা দেখেন। হাসপাতালে রোগীরা অক্সিজেনের জন্য ভর্তি হয়। কিন্তু আমরা দেখছি প্রাইভেট হাসপাতালগুলো অক্সিজেনে অনেক বেশী দাম নিচ্ছে। এটা প্রতারণা। ১ হাজার লিটার অক্সিজেনের জন্য খরচ হয় ৭০ টাকা। কিন্তু আমরা দেখেছি অনেক হাসপাতাল লাখ টাকার বিল ও নিচ্ছে।
সরকারের নৈতিক দায়িত্ব হবে এইসব জিনিসের দাম নির্ধারন করে দেয়া। তা না হলে জনগণকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করা যাবেনা। রুমিন ফারহানা কে বলবো সংসদে এই বিষয়টা উত্থাপন করতে। অক্সিজেন তো ফ্রী হওয়া উচিত। এ সময় অক্সিজেনের মূল্য স্থির করে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, রুমিন ফারহানা এখনো পুরো সুস্থ না, কিন্তু তবুও তিনি প্লাজমা দিতে এসেছেন, এটা চমৎকার ব্যাপার। আমরা গৌরব বোধ করছি রুমিন নিজ থেকে এটা করেছেন। আমরা তার সাথে কোনো যোগাযোগ করিনি। তিনি খুব সজাগ একজন নাগরিক যিনি জনগণের জন্য এতটাই ভাবেন। রুমিন ফারহানা একটা চমৎকার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।

তিনি বলেন, “আমি চাই করোনা থেকে সুস্থ অন্য এমপিরাও প্লাজমা দানে এগিয়ে আসবেন। যারা করোনা আক্রান্ত নন তারাও নিয়মিত রক্তদানে এগিয়ে আসতে পারেন”।
তিনি আরও বলেন, “দেশে প্লাজমা সংগ্রহ এখনো পর্যাপ্ত না। তাই প্রতিটি করোনা আক্রান্ত মানুষকে প্লাজমা দানে এগিয়ে আসতে হবে। একজন মানুষের প্লাজমা দিয়ে ৫ জন রোগীকে চিকিৎসা দেয়া যায়।

রুমিন ফারহানা বলেন, “করোনা লুকিয়ে রাখার বিষয় না। সে কারণে করোনা পজিটিভ জানার সাথে সাথে আমি ফেইসবুকে সেটা জানিয়েছি। দেশের সব মিডিয়ার সাংবাদিক ভাইয়েরা সেটা নিয়ে সংবাদ করে সবাইকে জানিয়েছেন। এতে আমার আমার প্রতিবেশী এবং আমার সাথে যাদের যোগাযোগ করার কথা তারা সতর্ক থাকতে পেরেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “করোনার শুরু থেকেই আইসিইউ-ভেন্টিলেটর দূরেই থাকুক সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত অক্সিজেনও নেই। প্লাজমা থেরাপির মাধ্যমে রোগীদের যদি আইসিইউ পর্যন্ত যেতে না হয়, বা রেমডিসিভির এর মত দামি ওষুধ নিতে না হয় তাহলে সেটাও অনেক বড় একটা প্রাপ্তি”।

আমি বিশ্বাস করি করোনা থেকে সেরে ওঠা প্রতিটা মানুষ যদি অন্য কোনো বড় অসুস্থতায় আক্রান্ত না থেকে থাকেন তাহলে প্লাজমা দেয়া তাদের কর্তব্য। আমি সেই কর্তব্যটিই পালন করতে এসেছি। আমার জেনে খুব ভালো লাগছে এই রক্ত দিয়ে ৫ জন গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগী উপকৃত হবেন।

আমি আশা করি করোনা থেকে সেরে ওঠা প্রতিটি মানুষ প্লাজমা দেবেন। এই ভয়ঙ্কর মহামারীর সময় সরকার আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি, তাই আমাদের সকলের উচিত নিজেদের পাশে দাঁড়ানো।

© Alright Reserved 2020, The Morning Telegraph