স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে। শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন তিনি।
তার এই পদত্যাগকে ঘিরে বিশ্ব রাজনীতিক ও ব্যবসায়িক মোড়লদের মধ্যে মিশ্র প্রক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন
এক টুইট বার্তায় জনসন বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অ্যাবে তার দেশ এবং সর্বোপরি বিশ্বের জন্য মহান কিছু অর্জন রেখে গেছেন। তার নেৃতৃত্বে জাপান এবং ব্রিটেনের মধ্যকার বাণিজ্যিক, প্রতিরক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে।
‘তোমার এই অকৃত্রিম সেবার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। তোমার সুস্থতা কামনা করি’।
রাশিয়া
শিনজো অ্যাবে এবং পুতিনের কাজের সম্পর্ককে ‘মেধাবী’ আখ্যা দিয়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই পদত্যাগে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
থাইওয়ানের রাষ্ট্রপতি সাই ইংক উয়েন
প্রধানমন্ত্রী অ্যাবে সবসময় থাইওয়ানের প্রতি বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করেছেন। আমরা তার এই আচরণকে সারাজীবন মূল্য দেব এবং আশা করি তিনি ভালো থাকবেন।
কেং মিন সিয়ক- দক্ষিণ কোরিয়া রাষ্ট্রপতির নীল হাউজের মুখপাত্র
আমরা তার হঠাৎ এই পদত্যাগের সিদ্ধান্তে মর্মাহত। জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মেয়াদী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি অনেকগুলো অর্জনের স্বাক্ষর রেখে গেছেন। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে তিনি অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছেন। আমরা তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। আশা করি পূর্বের মত, আমাদের সরকার দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী ও নতুন ক্যাবিনেটের সঙ্গে সহযোগিতা বজায় রাখবেন।
ওয়ং তে-সিংগ, কোরিয়ান শিল্প ফেডারেশনের ভাইস-চেয়ারম্যান
রাষ্ট্রপতি মুন যে-ইন এবং শিনজো অ্যাবের মধ্যকার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো না থাকায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নীতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যখন একজন নতুন নেতা আসবেন তখন তিনি আমাদের মধ্যকার সম্পর্ক জোরদারে এগিয়ে আসবেন। এটিই আশা করি।
তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে যখন বিশ্বে ব্যবসা–বানিজ্যে খারাপ প্রভাব পড়েছে তখন নিজেরা অহেতুক কূটনীতিক ও বানিজ্যিক দ্বন্দ্বে জড়ালে আমাদেরই ক্ষতি হবে’।
ম্যারকাস চুরম্যান, সিইও, জাপানে জার্মান চেম্বার
পুরো বিশ্বকে মুক্ত বাজার ব্যবস্থার অধীনে আনতে তিনি কাজ করে গেছেন এবং জাপানকে বিশ্বের বুকে একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
অ্যাবের অধীনে আমাদের একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ছিল, যেটা অনেক মারাত্মক সমস্যার সমাধান করেছেন। এর প্রমাণ পাই যখন আমরা চীন ও রাশিয়ার সাথে জাপানের সম্পর্ক চিন্তা করি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক আরো কঠিন ছিল, বিশেষ করে যখন ট্রাম্প ক্ষমতার মসনদে বসলেন।
তিনি ব্যর্থ হয়েছেন, আমি সেটা বলতে চাই না। কিন্তু একটি কথা বলতে চাই সেটা হল, অ্যাবে একটা অমীমাংসিত সমস্যা রেখে গেছেন, সেটা হল কোরিয়ার সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক। আমি মনে করি তার উত্তরাধিকারীরা এই বিষয়ে কাজ করবেন।
তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে অলিম্পিক গেইমস জাপানের রাজধানী টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমি মনে করি, সেটা ভুলে যাওয়া আমাদের উচিত হবে না।